রাজবাড়ীতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কিশোরীকে ধর্ষণ ও স্বর্ণালংকার চুরির দায়ে প্রতারক প্রেমিক গ্রেপ্তার

রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে রং নম্বরে পরিচয়ের পর ১৭ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণ ও স্বর্ণলংকার চুরি করা প্রতারক প্রেমিক সুদীপ্ত হালদার ওরফে সুমনকে গ্রেপ্তার করেছে। সে বাগেরহাট জেলার রামপাল থানার দেবকাটা পুর্ব গ্রামের সুকুমার হালদারের ছেলে।

মামলা সুত্রে জানা গেছে, গত ২ মাস পূর্বে মোবাইল ফোনে রং নম্বরে সুদীপ্ত হালদার ওরফে সুমনের কিশোরী (১৭) পরিচয় হয়। সে নিজেকে একজন সরকারী চাকুরীজীবি বলে পরিচয় দেয় এবং বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে কামলালসা চরিতার্থ করারহীন উদ্দেশ্যে ফুসলাইতে থাকে। গত ২২ মে রাত ৮ টার সময় সুদীপ্ত হালদার ওরফে সুমন তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর ০১৯১৯-৭০২৮০৮ থেকে কিশোরীর মোবাইল নাম্বারে কল করে। তাকে “সে রাজবাড়ীতে আসছে এবং রাতে তাদের বাড়ীতে আসবে। পরে কিশোরী তার পিতা-মাতা রাত ৯ টার সময় রাতের খাবার শেষে ঘুমিয়ে পড়ে। রাত ১০ টার সময় সুদীপ্ত হালদার ওরফে সুমন তাকে ফোন দিয়ে জানায় যে, সে তাদের এলাকায় আসছে, কিন্তু তাদের বাড়ী চিনিতে পারছে না। তখন কিশোরী মোবাইলে তাদের বাড়ীর লোকেশন দিলে সে তাদের বাড়ীতে আসে। কিশোরী গোপনে তাকে তার শয়ন ঘরে নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ১১ টার সময় সুদীপ্ত হালদার ওরফে সুমন বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরীকে শয়ন ঘরের খাটের উপর ধর্ষণ করে। তারপর তারা ঘুমিয়ে পড়ে। গত ২৩ মে রাত ৩ টার সময় কিশোরী ঘুম থেকে জেগে দেখে আসামী নাই। তার রুমে রক্ষিত সাব-বাক্সটি খোলা অবস্থায় দেখিতে পায়। কিশোরী দিশেহারা হয়ে তারা বাবা-মাকে ঘুম থেকে ডেকে উঠায় এবং ঘটনাটি বিস্তারিত বলে। তারা দেখে সাব-বাক্সের মধ্যে থাকা গরু বিক্রির নগদ দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা, ১টি স্বর্ণের হার, ২ টি স্বর্নের রুলি, ৩ টি স্বর্নের কানের দুল, ১টি স্বর্নের ব্যাসলেট, ১ টি স্বর্ণের আংটি সহ ৪ ভরি স্বর্ণালংকার এবং কিশোরীর একটি সিম্ফনি বাটন মোবাইল সেট নেই। এ ঘটনায় বালিয়াকান্দি থানায় এজাহার দায়ের করলে বালিয়াকান্দি থানায় গত ২৪ মে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়।

মামলা দায়েরের পর পুলিশ সুপার মোঃ কামরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মোঃ শরীফ আল রাজীব, পিপিএম-সেবা, সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) দেবব্রত সরকারের নেতৃত্বে বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনর্চাজ জামাল উদ্দিনের সার্বিক সহযোগিতায় পুলিশের চৌকশ টিমের সদস্য এসআই হিমাদ্রি হালদার, এসআই আশিকুর রহমান, এএসআই রুবেল সহ সঙ্গীয় ফোর্স সহ অভিযান পরিচালনা করে। গত ২৫ মে সকাল ৬ টার সময় সুদীপ্ত হালদার ওরফে সুমনকে তার বসত বাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার হেফাজত থেকে চোরাইমাল একটি স্বর্ণের হার ওজন ৭ আনা ৩ রতি, এক জোড়া কানের দুল ওজন ২আনা ৪ রতি ৭ পয়েন্ট, ১ জোড়া কানের রিং ওজন ১ আনা ৪ রতি, ২টা নাকফুল ওজন ১ রতি, ১ জোড়া স্বর্ণের বালা ওজন ১ ভরি ৪ আনা ২ রতি ৮ পয়েন্ট, সহ স্বর্ণের গহনার ওজন ২ ভরি ৩ রতি ৫ পয়েন্ট, একটি বাটন মোবাইল সেট এবং সুদীপ্ত হালদার ওরফে সুমনের ব্যবহৃত একটি বাটন মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়েছে।

বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ জামাল উদ্দিন বলেন, আসামীকে সোমবার রাজবাড়ী আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post