মিশরে কুরবানির ঈদ উদযাপন: আল-আজহার ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-এর সৌহার্দ্যমণ্ডিত আয়োজন

জাহেদুল ইসলাম আল রাইয়ান, লেখক ও কলামিস্ট, শিক্ষার্থী আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়,মিশর- পবিত্র কুরবানির ঈদ উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্র শিবির-এর অঙ্গ সংগঠন আল-আজহার ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে মিশরে আয়োজিত হয় এক হৃদয়ছোঁয়া ঈদ পুনর্মিলনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রবাসে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্রদের মধ্যে ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধ, কুরবানির আত্মদানের চেতনা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত এ অনন্য অনুষ্ঠানে মিলিত হন শতাধিক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী।

অনুষ্ঠানের সূচনা হয় তিলাওয়াতে কালামুল্লাহ—পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে। এরপর সংগঠনের নিজস্ব শিল্পীরা সুললিত কণ্ঠে পরিবেশন করেন হামদ ও নাত, যা দর্শক-শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে যায়। তেলাওয়াত ও ইসলামী সংগীতের পর্ব শেষে শুরু হয় আলোচনাসভা, যেখানে প্রবাসী ছাত্রদের মাঝে ঈদের প্রকৃত শিক্ষা ও আত্মদানের মহত্ত্ব তুলে ধরেন আলোচকবৃন্দ।

বক্তব্য প্রদান করেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ড. কামাল উদ্দিন জাফরি, প্রিন্সিপাল, জামিয়া কাসেমিয়া মাদ্রাসা, নরসিংদী; মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, সভাপতি, ইত্তেহাদ; মোহাম্মদ তাজদিদ বিন মাওদূদ, সভাপতি, আল-আজহার ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ; এবং উপস্হাপনায় ছিল মাহমুদুর রহমান ত্বহা।

বক্তারা তাঁদের বক্তব্যে বলেন, “কুরবানির প্রকৃত শিক্ষা হলো আত্মোৎসর্গ, তাকওয়া ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার। প্রবাসে থেকেও এই চেতনা হৃদয়ে ধারণ করাই আমাদের ঈদের মূল উপলক্ষ।” তারা আরও বলেন, “এই ধরনের আয়োজন প্রবাসে আমাদের আত্মিক বন্ধন সুদৃঢ় করে এবং ইসলামী ঐক্যের বুননকে মজবুত করে তোলে।”

অনুষ্ঠানের বিশেষ মুহূর্ত ছিল রমজান মাসে কুরআনের ১৫ পারা অর্থসহ তেলাওয়াত করা কর্মীও সদস্যদের সম্মাননা প্রদান। কর্মীও সদস্যদের এই অনন্য সাধনার স্বীকৃতিস্বরূপ অতিথিবৃন্দ তাঁদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন, যা উৎসাহ ও প্রেরণার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।

এই ঈদ আয়োজন কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা ছিল না—বরং ছিল হৃদয় সংলগ্নতা, ইসলামী সংস্কৃতি ও আত্মিক উন্নয়নের এক মহৎ প্রয়াস। আল-আজহার ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-এর এই মহতী উদ্যোগ প্রবাসে বাংলাদেশি ছাত্রদের জন্য এক অনন্য সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন রচনা করেছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post