গলায় ফাঁস দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা

মোঃ অমিদ হাসান ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বাকা ইউনিয়নে হৃদয়বিদারক এক ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার বাঁকা পশ্চিমপাড়া গ্রামের আলমগীর হোসেনের ছেলে সালমান হোসেন (২৪) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

সোমবার দিবাগত রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে (১৫ জুলাই) নিজ ঘরের ভেতর এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে সালমান নিজ কক্ষে ঘুমাতে যান। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ দরজা না খোলায় সন্দেহ হলে তার মা তাকে ডাকাডাকি করেন।

সাড়া না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখতে পান, সালমান ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আছেন। দ্রুত তাকে নিচে নামানো হলেও ততক্ষণে তিনি নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন বলে নিশ্চিত হন।

তৎক্ষণাৎ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে রাতেই জীবননগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

সালমানের আত্মহত্যার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা না গেলেও পরিবারের দাবি, তিনি কিছুদিন ধরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। স্থানীয়দের মতে, সম্প্রতি সালমান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন। তবে সেখান থেকে আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ায় তিনি হতাশায় ভুগছিলেন।

এদিকে এমন মর্মান্তিক ঘটনার পর পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সালমান ছিলেন ভদ্র, বিনয়ী ও শান্ত স্বভাবের ছেলে। তার এমন করুণ পরিণতি কেউই মেনে নিতে পারছেন না।

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, “আমরা প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা হিসেবেই তদন্ত শুরু করেছি। তবে বিস্তারিত জানার জন্য পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যদি কোনো অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া যায় তবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সালমান হোসেনের অকাল মৃত্যুতে পরিবারে চলছে শোকের মাতম। তার বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুরা সবাই ভেঙে পড়েছেন।

মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে পরিবারের সদস্যদের আরও যত্নবান ও সচেতন হওয়া জরুরি। মানসিক সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণগুলো অবহেলা না করে চিকিৎসা ও পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

এমন করুণ আত্মহত্যার ঘটনা আমাদের সবাইকে আবারও ভাবতে বাধ্য করে – আমরা কি যথেষ্ট মনোযোগ দিচ্ছি আমাদের আশেপাশের মানুষদের মানসিক অবস্থার দিকে?

Post a Comment

Previous Post Next Post