নিজস্ব প্রতিবেদক- নিষিদ্ধ পলিথিনের উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ বন্ধে যৌথবাহিনীর কঠোর অভিযান শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তবে পলিথিনের কার্যকর ও বাস্তবসম্মত কোনো বিকল্প না দিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাদেশ সচিবালয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় রিজওয়ানা হাসান বলেন, “বারবার সতর্ক করার পরও যারা নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের আর ছাড় নয়। যৌথবাহিনীকে নিয়ে অচিরেই কঠোর অভিযান শুরু হবে।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিদপ্তর, র্যাব, ডিএমপি, জেলা প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাত, বিক্রয়, প্রদর্শন, মজুদ ও পরিবহনের বিরুদ্ধে সমন্বিত অভিযান চালানো হবে।
তবে পলিথিন ব্যবসায় জড়িতরা এবং ভোক্তাদের অনেকেই বলছেন, কার্যকর বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়াই এ ধরনের অভিযান শুরু করা জনজীবনে ভোগান্তি সৃষ্টি করবে। স্থানীয় বাজারে এখনও পরিবেশবান্ধব ব্যাগের সরবরাহ ও প্রাপ্যতা অত্যন্ত সীমিত। ফলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণের সামনে বড় ধরনের সংকট দেখা দিতে পারে।
একজন খুচরা বিক্রেতা জানান, “বাজারে ১ টাকার পলিথিনের বিকল্প ৫ টাকায়ও পাওয়া যায় না। সরকার যদি আগে বিকল্প ব্যবস্থা করত, তাহলে হয়তো আমরা নিজেরাই সরে আসতাম।”
সমালোচকরা বলছেন, অভিযান চালানোর আগে জনগণকে সচেতন করা, পরিবেশবান্ধব ব্যাগের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ভর্তুকি বা সহায়তা ছাড়া এই উদ্যোগ বাস্তবতা বিবর্জিত এবং ‘বোকামির’ শামিল।
উল্লেখ্য, একই দিনে কিশোরগঞ্জে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে একটি পলিথিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে মামলা ও পলিথিন জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে কারখানার কার্যক্রম বন্ধ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, পরিবেশ রক্ষায় কঠোর অবস্থান অবশ্যই প্রশংসনীয়, তবে সেটি হতে হবে বাস্তবভিত্তিক, পর্যায়ক্রমে এবং সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে। তা না হলে এর নেতিবাচক প্রভাবই বেশি পড়বে সমাজে।
Post a Comment