নয়া বাংলা ডেস্ক
মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, জাতির গর্ব বঙ্গবীর জেনারেল এম এ জি ওসমানীর ১০৭তম জন্মবার্ষিকী সোমবার ১ সেপ্টেম্বর। কিন্তু বিস্ময়করভাবে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নেই কোনো কর্মসূচি, নেই কোনো শ্রদ্ধানুষ্ঠান। প্রশ্ন উঠছে -এ কি কেবল অবহেলা, নাকি ইতিহাস মুছে ফেলার একটি নীরব ষড়যন্ত্র?
১৯১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর সিলেট শহরে জন্মেছিলেন ওসমানী। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে উচ্চপদে দায়িত্ব পালনের পর ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সর্বাধিনায়ক হিসেবে তিনি পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। তার নেতৃত্ব ছাড়া বিজয়ের ইতিহাস কল্পনাই করা যেত না। অথচ আজ স্বাধীন বাংলাদেশেই তার জন্মদিন উপেক্ষিত।
সবচেয়ে লজ্জার বিষয়, ওসমানীর নামানুসারে গঠিত ওসমানীনগর উপজেলাতেও নেই কোনো আয়োজন। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও সচেতন মহল ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘যে উপজেলার নামই রাখা হয়েছে বঙ্গবীর ওসমানীর নামে, সেখানে জন্মবার্ষিকীতে মাইকে এক মিনিটের ঘোষণাও শোনা যায় না। আলোচনা সভা নেই, শ্রদ্ধা নেই, নিস্তব্ধতার মধ্যেই হারিয়ে যাচ্ছে ইতিহাস।’
তাদের অভিযোগ—বিভিন্ন খাতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয় শোভাযাত্রা, সম্মেলন বা উৎসবে; অথচ মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়কের জন্মবার্ষিকীতে রাষ্ট্রের সামান্যতম আগ্রহও নেই। বরং রাজনৈতিক সুবিধাবাদ আর প্রাতিষ্ঠানিক উদাসীনতার কারণে বারবার উপেক্ষিত হচ্ছেন জাতির এই মহানায়ক।
আরো হতাশার বিষয় ওসমানীর জন্মদিনে পরিবার থেকেও কোনো উদ্যোগ নেয়ার খবর পাওয়া যায়নি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক সংগঠন কিংবা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ—কেউই তার স্মরণে কোনো আয়োজন করেননি। ফলে পুরো ওসমানীনগরই থেকেছে নিশ্চুপ।
বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক আব্দুল হাই মোশাহিদ জানান, রাষ্ট্র কি ইচ্ছাকৃতভাবে ওসমানীকে বিস্মৃতির অন্ধকারে ঠেলে দিতে চাইছে? পরিকল্পিত অবহেলায় ইতিহাসকে আড়াল করা হচ্ছে, যা জাতীয় পরিচয় ও মূল্যবোধের জন্য সরাসরি হুমকি।
বালাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছুরাব আলী জানান, রাষ্ট্রীয়ভাবে ওসমানীর জন্মবার্ষিকী পালন ও
ওসমানীনগরে স্থায়ী কর্মসূচি চালু করতে হবে। নচেৎ ইতিহাস অবহেলার দায় ভবিষ্যৎ প্রজন্ম রাষ্ট্র ও শাসকদের কোনোদিন ক্ষমা করবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীনের সরকারি মুঠোফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন