সরকারী ভাবে সরবরাহ নেই ভ্যাকসিন ॥ আতঙ্কিত কৃষক-খামারীরা

রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ রাজবাড়ীতে বেড়েছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ

 রাজবাড়ীর জেলার পাঁচটি উপজেলায় দেখা দিয়েছে গরুর লাম্পি স্কিন (এলএসডি) রোগ। এতে দিন দিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। ভাইরাস জনিত এ রোগে আক্রান্তের মধ্যে অল্প বয়সের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে যাওয়ায় গরু-বাছুর নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খামারিসহ কৃষকেরা।

রাজবাড়ী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্যমতে, রাজবাড়ী জেলার পাংশা, কালুখালী, বালিয়াকান্দি সদর ও গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন এলাকাতেই এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গরু। রোগটি ছোঁয়াচে হওয়ায় মশা-মাছির মাধ্যমে এক গরু থেকে অন্য গরুর দেহে সহজে ছড়িয়ে পড়ছে। প্রতিষেধক হিসেবে লাম্পি স্কিন ডিজিজ-এর জন্য সরকারি কোন ভ্যাকসিন সরবরাহ নেই। তাই এলএসডি থেকে গবাদিপশু রক্ষায় গ্রামে গ্রামে উঠান বৈঠক করে সংশ্লিষ্ট কৃষক ও খামারিদের করণীয় সম্পর্কে সতর্ক করছে জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা।

তবে এখন পর্যন্ত কি পরিমাণ গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে তার সঠিক কোন তথ্য জানাতে পারেনি জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা।

সরজমিনে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকালে গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাণী সম্পদ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ছোট ভাকলা ইউনিয়নের ছোট ভাগলপুর এলাকা থেকে আলেয়া নামে এক নারী তার লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত একটি ছোট বাছুর গরু নিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, গত ২০ দিন যাবৎ তার গরুর শরীরে গোটা গোটা উঠেছে। গত ৪-৫ দিনে বাছুরটি বেশি অসুস্থ হওয়ায় ডাক্তার দেখাতে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন।

উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ গোলজার হোসেন মৃধা বলেন, আমার একটি গরুর পা ফুলে গেছে, এ জন্য পশু হাসপাতালের চিকিৎসককে জানালে তিনি এসে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গেছেন।

তিনি আরও বলেন, বাছুরটির শরীরে জ্বর জ্বর আসতে শুরু করেছে। ডাক্তার দেখে বলেছে, বাছুরটি এলএসডি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের গ্রামে গত এক সপ্তাহে গরুর লাম্পি স্কিন রোগে তিনজনের গরু মারা যায়।

রাজবাড়ী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. প্রকাশ রঞ্জন বিশ্বাস বলেন ‘লাম্পি স্কিন নামের ভাইরাসজনিত এ রোগটি ছোঁয়াচে। মশা ও মাছির মাধ্যমে এক গরু থেকে অন্য গরুর দেহে সহজে ছড়িয়ে পড়ে। সরকারি ভাবে আমরা এ রোগের কোন ভ্যাকসিন এখনো সরবরাহ পাইনি। তবে বেসরকারি ভাবে কিছু কিছু ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোর দাম বেশি। রোগটি সম্পর্কে এলাকার কৃষক ও খামারিদের সতর্ক করতে আমরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে নিয়মিত উঠান বৈঠক করছি। সেখানে খামার, গোয়ালঘরসহ আশপাশ এলাকা সবসময় পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন রাখা, মশারি ব্যবহারের পাশাপাশি গরু ও বাছুরকে ভিটামিনযুক্ত পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়ানোসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি।

Post a Comment

Previous Post Next Post