নয়া বাংলা অনলাইন
আন্তর্জাতিক | ১১ আগস্ট ২০২৫ (সোমবার)
২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ভারতজুড়ে মারাত্মক বোমা হামলার পরিকল্পনা এবং তা বাস্তবায়ন করেছিলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস), ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবং বজরং দলের জ্যৈষ্ঠ নেতারা। আরএসএস এর ভেতরকার একজন এই বিস্ফোরক তথ্য দিয়েছেন।
ভারতীয় সাংবাদমাধ্যম দ্য ওয়্যারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাবেক আরএসএস নেতা যশবন্ত শিন্দে জানান, এই ষড়যন্ত্রটি ছিল কেবল রাজনৈতিক ক্ষমতার স্বার্থে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা উসকে দেওয়ার এবং হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করার একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টা।
“শুধুমাত্র ক্ষমতার জন্য এটি ছিল আরএসএস, ভিএইচপি, বজরং দল এবং বিজেপির অত্যন্ত জঘন্য এবং বিকৃত মানসিকতার লোকদের দ্বারা ষড়যন্ত্র,” বলেন শিন্দে।
“তারা দেশে আগুন ধরিয়ে দিতে চেয়েছিল যাতে ক্ষমতা সর্বদা তাদের কাছে থাকে,” আরও যোগ করেন তিনি।
সাবেক এই আরএসএস নেতা বলেন, “রাজনৈতিকভাবে কোমায় থাকা অবস্থায় তারা ১৯৮৯ সালে ৮২ থেকে ৮৪টি আসনের জন্য অযোধ্যাকে কাজে লাগিয়েছিল, তাদের চোখ জ্বলে উঠেছিল এবং বারবার অটল বিহারী বাজপেয়ীকে প্রধানমন্ত্রী পদে উন্নীত করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিল।’’
তিনি বলেন, হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা, পাকিস্তান এবং কাশ্মীরে হামলা রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জনের পরিকল্পনার অংশ ছিল।
শিন্দে আরএসএস নেতা ইন্দ্রেশ কুমারকে এই পরিকল্পনার নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেন। তিনি ২০০০ সালের দিকে নান্দেদের একটি দলের সাথে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন এবং সেই দলটি সেনাবাহিনী থেকে অস্ত্র প্রশিক্ষণও নিয়েছিল। বেসামরিক নাগরিকদের উপর আক্রমণ করতে তাদের পাকিস্তানে পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল।
তিনি জানান, এই দলটি টাইম বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। মুসলিম বিবাহের মতো জনসমাবেশকে লক্ষ্য করে হামলা চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল এবং তারা গিয়ে এই কাজগুলিই করেছিল।
শিন্দে ২০০৬ সালে নান্দেদে দুর্ঘটনাক্রমে বিস্ফোরিত হওয়া একটি বোমা তৈরির কথা স্মরণ করেন। এতে একজন আরএসএস সদস্য নিহত হন। তিনি অভিযোগ করেন, ওই ষড়যন্ত্রে জড়িতদের মধ্যে ছিলেন রাকেশ ধাওড়ে এবং রবি দেব।
১৯৯৪ সালে আরএসএসে যোগদানকারী শিন্দে আরও জানান, তিনি ভেতর থেকে ষড়যন্ত্রটি ব্যর্থ করার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু প্রাণনাশের ভয়ে প্রকাশ্যে এর বিরোধিতা করতে পারেননি।
সুপ্রিম কোর্ট নতুন তদন্তের দাবিতে তার আবেদন খারিজ করার পর তিনি প্রকাশ্যে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেন।
সূত্রঃ ডন
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন