জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের প্রতিবাদে লাল কার্ড সমাবেশ কলেজ স্টুডেন্টস ফোরামের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা | ২০ আগস্ট ২০২৫ (বুধবার)

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনকে লাল কার্ড দেখিয়ে  ক্যান্টনমেন্ট এরিয়ার কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের সংগঠন 'কলেজ স্টুডেন্টস ফোরাম' নামে একটি সংগঠন। আজ বিকেল পাঁচটায় ইসিবি চত্বরে এ প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। 

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা মনে করি- জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আধুনিক রূপ। এটি দেশে অবস্থান করলে দেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হবে। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রাম অস্থিতিশীল হবে, পাহাড়ের সন্ত্রাসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীরা আরো বেশি সক্রিয় হয়ে উঠবে। দক্ষিণ এশিয়ার মানচিত্র পরিবর্তন তথা পরিকল্পিত 'ইহুদীবাদী খ্রিস্টান রাষ্ট্র' গঠন তরান্বিত হবে।


তারা সতর্ক করে বলেন, এই কার্যালয় তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে দেশের মূল্যবোধ বিনষ্ট করবে; সমকামিতার মতো জঘন্য বিকৃতিকে বৈধতা দেওয়া, পতিতাবৃত্তির স্বীকৃতির নামে নারীর জঘন্য অবমূল্যায়ন ও পাচারকে পরোক্ষ সমর্থন এবং ধর্ম পালন ও প্রচারের স্বাধীনতা হরণ করা হবে। এছাড়া, বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে ধর্ষক, খুনী, এসিড নিক্ষেপকারী বা গণহত্যায় জড়িতদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। কিন্তু মৃত্যুদন্ডের পক্ষপাতী না হওয়ায় এসব অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করতে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস থেকে সরকারের উপর চাপ আসতে পারে। ফলে দেশে অপরাধ প্রবণতা বাড়বে, ফরিয়াদীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবে এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হবে। এককথায়, দেশে এক গভীর সামাজিক ও আদর্শিক সংকট তৈরি হবে।

শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, সাধারণত যুদ্ধবিধ্বস্ত ও চরম অস্থিতিশীল দেশগুলোতে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশে এই অফিস স্থাপিত হওয়ায় দেশের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণ হবে। বিদেশগামী শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিকট বিব্রতকর অবস্থায় পড়বে! 

তারা বলেন, রসূল ﷺ-কে নিয়ে কটুক্তি করার শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, দেশীয় আইনে এর নির্দিষ্ট সাজা রয়েছে। জাতিসংঘ মানবধিকার কমিশন ‘বাকস্বাধীনতার’ অধিকার নিয়ে কাজ করে। কিন্তু জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন ‘বাকস্বাধীনতা’র নামে বিশ্বব্যাপী ধর্মীয় অবমাননার ঘটনায় নীরব থেকেছে; বরং সংস্থাটি এমন অবমাননাকে শাস্তিমূলক বিধানে অন্তর্ভুক্ত করা সমর্থন করে না! পশ্চিমা অপশক্তিগুলো ধর্মীয় অবমাননাকে এই কথিত ‘বাকস্বাধীনতা’র আড়ালে বৈধতা প্রদানের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। ফলে আমাদের আশঙ্কা, লাগামহীন ‘বাকস্বাধীনতা’ চর্চার সুযোগের অপব্যবহার করে আমাদের দেশে শাতিমদের নব-উত্থান ঘটবে ও স্থিতিশীল অবস্থা চরমভাবে বিঘ্নিত হবে। এছাড়া, সম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করছি ডিজিটাল প্লাটফর্মে ধর্ম অবমাননা-সংক্রান্ত আইন বাতিলের পর থেকে দেশে ধর্ম অবমাননা বৃদ্ধি পেয়েছে; যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ৩ দফা দাবি পেশ করেন – 
১. নবীজি ﷺ কে কটুক্তির শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, এই আইন জারিসহ ধর্ম অবমাননা রোধে সর্বোচ্চ সাজার বিধান রেখে আইন জারি করতে হবে। 
২. দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও মূল্যবোধের স্বার্থে ঢাকায় স্থাপিত জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের অনুমোদন চুক্তি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
৩. অন্তর্বর্তী সরকার দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মূল্যবোধের পক্ষে অবস্থান করে অর্থাৎ সরকার এলজিবিটিকিউ বা সমকামিতা ও পতিতাবৃত্তিকে সমর্থন করে না, এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে রয়েছে তথা 'আদিবাসী' স্বীকৃতি ও পাহাড়ে স্বায়ত্তশাসনের মত বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রস্তাব দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে এর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিবে—শিক্ষার্থীদেরকে এই নিশ্চয়তা দিতে হবে।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন