মোঃ আল আমিন ইসলাম নীলফামারী প্রতিনিধি:
জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়নের চাষিদের জন্য দীর্ঘদিন ধরে সংকট তৈরি করেছে সেচ খালের সংস্কার কাজে বাধা। বন বিভাগের গাছগুলো এখনো অপসারণ না হওয়ায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ডালিয়া ডিভিশনের গুরুত্বপূর্ণ এই কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। এর ফলে ফসলি জমিতে পর্যাপ্ত পানি পৌঁছাতে না পারায় বহু কৃষক চরম বিপাকে পড়েছেন।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, সেচ খালের মাধ্যমে পানি না পেয়ে অনেক জমি অনাবাদী থেকে যাচ্ছে। কেউ কেউ বিকল্প উপায়ে ডিজেলচালিত পাম্প বা দূরবর্তী জলাশয় থেকে পানি তোলার চেষ্টা করছেন, যা ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ। এতে উৎপাদন খরচ বাড়ছে এবং ফসল উৎপাদন ঝুঁকির মুখে পড়ছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন খালটির সংস্কার প্রকল্পের বাজেট অনুমোদিত হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু খালপাড়ের গাছ না কাটায় কাজ শুরু করতে না পারায় স্থানীয়ভাবে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ বলেন, গাছ অপসারণকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর মাঝে দ্বন্দ্ব ও বিবাদ তৈরি হয়েছে, যা পুরো প্রকল্পকেই থামিয়ে রেখেছে।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাশিদুল ইসলাম বলেন,
“গাছগুলো অপসারণ না হওয়ায় আমাদের পক্ষে কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। গাছ কাটা হলে আমরা দ্রুততম সময়ে কাজ শুরু করবো এবং কৃষকদের জন্য পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারবো।”
স্থানীয় কৃষকরা জানান, খালের পানি না পেয়ে বীজতলা থেকে শুরু করে মাঠফসল পর্যন্ত নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অনেকে ঋণ নিয়ে চাষাবাদ করেন; সময়মতো পানি না পেলে সেই ঋণ শোধ করাও কঠিন হয়ে পড়ে।
সেচ প্রকল্পের ঠিকাদার মামুন ইসলাম বলেন,
“গাছগুলো কাটা হলে আমি সঙ্গে সঙ্গে কাজ শুরু করবো। কিন্তু এলাকার অভ্যন্তরীণ বিরোধের কারণে একমাত্র কৃষকরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাদের দুর্ভোগের দিকে কেউ নজর দিচ্ছে না।”
এদিকে জলঢাকা উপজেলা ফরেস্ট অফিসার জুবায়ের চৌধুরী বলেন,
“খুব শীঘ্রই গাছগুলো কর্তন করা হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি পরিষ্কার করে দেওয়া হবে, যাতে তারা দ্রুত কাজ শুরু করতে পারে।”
এলাকাবাসীর দাবি— জরুরি ভিত্তিতে গাছ কাটার কাজ সম্পন্ন করে সেচ খালের সংস্কার দ্রুত শুরু হলে কৃষকেরা স্বস্তি ফিরে পাবেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন