বড়ো ভাই উজ্জলের ছুরির আঘাতে ছোট ভাই জামাল খুন

মোঃ অমিদ হাসান ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার কাজিরবেড় ইউনিয়নের পলিয়ানপুর গ্রামে বড় ভাইয়ের ছুরির আঘাতে ছোট ভাই খু/নের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২৮ জুলাই) সোমবার সকালে আনুমানিক ৯টার দিকে এই হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম মো. জামাল হোসেন (৩০)। তিনি পেশায় একজন দিনমজুর ছিলেন। অভিযুক্ত বড় ভাইয়ের নাম উজ্জ্বল হোসেন (৩৫), তিনিও একই এলাকার বাসিন্দা।

‎স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক বিরোধের জেরে দীর্ঘদিন ধরেই দুই ভাইয়ের মধ্যে মতানৈক্য চলছিল। শনিবার রাতে পারিবারিক একটি বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত বড় ভাই উজ্জ্বল ধারালো ছুরি দিয়ে ছোট ভাই জামালের পেটে ও বুকে একাধিক আঘা*ত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় জামালকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

‎নিহতের পরিবার জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই উজ্জ্বল নেশার সঙ্গে জড়িত ছিল এবং প্রায়ই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করত। তার আগ্রাসী আচরণে পরিবার ও এলাকাবাসী অতিষ্ঠ ছিল। ঘটনার দিনও সে মাদকাসক্ত অবস্থায় ছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

‎এলাকাবাসী জানায়, ঘটনার পরপরই উজ্জ্বল পালিয়ে যায়। তার খোঁজে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। স্থানীয়রা আরও বলেন, জামাল একজন পরিশ্রমী ও শান্ত স্বভাবের মানুষ ছিলেন। তার এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

‎এ বিষয়ে মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, "ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত বড় ভাই উজ্জ্বলকে আটকের জন্য অভিযান চলছে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।"

‎এ ঘটনায় নিহত জামালের স্ত্রী, মা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হারিয়ে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। নিহতের ছোট ছেলেটি বাবার মৃত্যুর খবর বুঝে উঠতে না পারলেও মায়ের কোল ধরে বারবার বলছিল, “আমার আব্বু কই?”

‎এ ঘটনায় পলিয়ানপুর গ্রামে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্তপূর্বক দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করা হয়েছে।

‎উল্লেখ্য, পারিবারিক বিরোধ ও সম্পত্তি নিয়ে জের ধরে দেশে প্রায়শই এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটে চলেছে। সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি না থাকলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি থামানো সম্ভব নয় বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Post a Comment

Previous Post Next Post