জনগণের আপত্তি উপেক্ষা করে ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের চূড়ান্ত অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সব ধরনের আপত্তি ও উদ্বেগ উপেক্ষা করে অবশেষে ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনের কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে দেশব্যাপী বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত যেসব দেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় থাকে, সেই দেশগুলো যুদ্ধবিধ্বস্ত, গৃহযুদ্ধকবলিত কিংবা মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত। বর্তমানে বিশ্বের মাত্র ১৬টি দেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার স্থায়ী কার্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে: বুরকিনা ফাসো, সুদান, ইয়েমেন, ফিলিস্তিন, সিরিয়া, তিউনিসিয়া, নাইজার, মেক্সিকো, মৌরিতানিয়া, লাইবেরিয়া, হন্ডুরাস, গিনি, গুয়াতেমালা, কলম্বিয়া, কম্বোডিয়া ও শাদ।

এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় একটি ফিল্ড অফিস এবং ইউক্রেনে একটি ক্ষুদ্র মিশন রয়েছে। এই দেশগুলোর প্রায় সবই রাজনৈতিক অস্থিরতা, যুদ্ধ বা অভ্যন্তরীণ সংঘাতে বিপর্যস্ত। ফলে বাংলাদেশে এ ধরনের কার্যালয় স্থাপন আন্তর্জাতিক মহলে দেশের একটি নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এ বিষয়ে বলেন,"ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনের অফিস খোলা হলে বিশ্বে একটি বার্তা যাবে যে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি ভয়াবহ। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ এতে খুশি হবে কারণ তারা মনে করবে, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ কমবে, যা তাদের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা দেবে।"

তিনি আরও বলেন, “এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জাতীয় স্বার্থ ও সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া গভীরভাবে বিবেচনা করা উচিত ছিল।”

এছাড়াও বিশ্লেষক ও নাগরিক সমাজের একাংশ মনে করছে, পাহাড়ি অঞ্চলে মানবাধিকার অফিসের উপস্থিতি নতুন করে স্বায়ত্তশাসনের দাবি উসকে দিতে পারে। পাহাড়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা বাড়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না অনেকে। সেই সঙ্গে দেশে এলজিবিটি অধিকারসহ নানা আন্তর্জাতিক এজেন্ডা চাপিয়ে দেওয়ার পথ তৈরি হবে বলেও তাদের শঙ্কা।

Post a Comment

Previous Post Next Post