বাংলাদেশে অবৈধ ভারতীয় নাগরিকদের অনুপ্রবেশ ও বিএসএফ কর্তৃক পুশ-ইন প্রক্রিয়া বন্ধ এবং অবস্থানরত ভারতীয়দের অবিলম্বে ফেরত পাঠানোর দাবিতে “সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ”-এর উদ্যোগে শুক্রবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে এক নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) খন্দকার ফরিদুল আকবর এবং সঞ্চালনা করেন মোঃ মোস্তফা আল ইহযায।
বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট খায়রুল আহসান (চেয়ারম্যান, ইসলামিক মুভমেন্ট বাংলাদেশ), এডভোকেট ফরিদ উদ্দিন খান (সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান), লেঃ কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান, মেজর (অব.) হারুন আর রশিদ, মেজর (অব.) মাসউদুল হাছান (চেয়ারম্যান, মুসলিম ওয়ার্ল্ড), জহিরুল ইসলাম (চেয়ারম্যান, আরজেএফ), আমিনুল ইসলাম বুলু (সভাপতি, মোবাইল ফোন রিচার্জ ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশন), এডভোকেট রবিউল হোসেন রবি, ড. কাজী মনিরুজ্জামান, মুজাম্মেল মিয়াজি, আরিফ বিল্লাহ, মো. সেলিম রেজা বাচ্চু, জালাল আহমেদ, মো. সাহিদুল ইসলাম, লুবনা আক্তারসহ আরও অনেকে।
বক্তাগণ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টার তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে ২২ লাখ ভারতীয় কর্মরত রয়েছে, যারা প্রতি বছর ২৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকারও বেশি পাচার করছে। অবিলম্বে অবৈধ ভারতীয়দের চিহ্নিত করে ফিরিয়ে না দিলে এটি দেশের অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
তারা জানান, ভারত সরকারের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিভিন্ন রাজ্য থেকে মুসলমান এবং বাংলা ভাষাভাষীদের বাংলাদেশ সীমান্তে এনে পুশ-ইন করা হচ্ছে। শুধুমাত্র ৭ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সময়েই ১,২২২ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ। জুন মাসে এ সংখ্যা আরও বেড়ে প্রায় ১,৩০০ ছাড়িয়েছে।
এতে বলা হয়, ভারতের ‘পুশ-ইন’ কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন ও মানবাধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। যারা সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে তাদের সংখ্যা সরকারি পরিসংখ্যানে সীমাবদ্ধ নয়—বহু মানুষ রাতের আঁধারে অনুপ্রবেশ করে দেশের অভ্যন্তরে আত্মগোপনে চলে যাচ্ছে।
বক্তারা জানান, ২০০৩ সালে বিএনপি সরকার ভারতীয় পুশ-ইনকে কড়া অবস্থান নিয়ে আটকে দিয়েছিল। আজকের সরকার তা পারছে না। বরং পররাষ্ট্র উপদেষ্টার নতজানু বক্তব্য আরও উদ্বেগজনক।
তাদের দাবি—
১. অবৈধভাবে অবস্থানরত ভারতীয়দের অনতিবিলম্বে দেশে ফেরত পাঠাতে হবে।
২. পুশ-ইন হওয়া প্রতিটি ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে পুশ-ব্যাক করতে হবে।
৩. সীমান্তে বিএসএফের পুশ-ইন বন্ধে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চাপ বাড়াতে হবে।
৪. নতজানু পররাষ্ট্রনীতি থেকে সরে এসে স্বাধীন ও জবাবদিহিমূলক কূটনীতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
বক্তারা হুঁশিয়ার করে বলেন, “জ্বলন্ত জুলাইয়ের পর আসছে রক্তবৃষ্টির আগস্ট।” দেশের মানুষ এখন আর নীরব দর্শক নয়—তারা একটি স্বাধীন, স্বনির্ভর ও শক্তিশালী বাংলাদেশ চায়।
Post a Comment