সাদিয়া জান্নাত কেয়া, জবি প্রতিনিধি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পরেই টাঙ্গাইলে শহীদ সাজিদ পরিবারের কাছে ছুটে গেলেন স্বতন্ত্র এজিএস পদপ্রার্থী তামজিদ ইমাম অর্ণব। জুলাই অভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারানো হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী একরামুল হক সাজিদের প্রতি সম্মান জানাতে তিনি এ সফরে যান।
গত ৪ আগস্ট রাজধানীর মিরপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে মাথায় গুরুতর আহত হন সাজিদ। গুলিটি মাথা ভেদ করে চোখের পেছনে আটকে গেলে তাকে দ্রুত সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। টানা চিকিৎসার পরও তাকে বাঁচানো যায়নি। সাজিদের মৃত্যুর পর শোক সইতে না পেরে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই মারা যান তার বাবা।
অর্ণব জানান, মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর তার মনে হয়েছে—আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে কথা বলার স্বাধীনতা, সংগঠন করার অধিকার, দাবি তোলার সাহস—সবই সম্ভব হয়েছে যাদের আত্মত্যাগের কারণে, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা তাঁর নৈতিক দায়িত্ব। এই উপলব্ধি থেকেই তিনি সাজিদের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার বিল কুকরি গ্রামে যান।
সেখানে তিনি সাজিদ ও তাঁর বাবার কবর জিয়ারত করেন এবং পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। সফরকালে সাজিদের একটি অপূর্ণ ইচ্ছার কথা জানতে পারেন—বাড়ির পাশের টিনশেড মসজিদটি পাকা করে দেওয়ার স্বপ্ন ছিল তাঁর। আন্দোলনের সময় তৎকালীন উপদেষ্টা নাহিদ, জেলা প্রশাসক এবং ইউএনও সরেজমিনে গিয়ে তিনতলা ভিটের ওপর দোতলা মসজিদ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। প্রাথমিক বাজেট ধরা হয় এক কোটি টাকা, পরে ৬৫ লাখ টাকার বিলও পাস হয়।
কিন্তু এখনও কাজের অগ্রগতি নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে অর্ণব জানতে পারেন, একটি প্রশাসনিক সিগনেচারের অভাবে প্রকল্পটি আটকে আছে।
সাজিদের কবরের সামনে দাঁড়িয়ে অর্ণব পরিবারকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসেন—মসজিদ নির্মাণের কাজ দ্রুত শুরু করতে তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন।
অর্ণব বলেন, “একজন প্রার্থী হিসেবে নয়, একজন সহপাঠী ও সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে শহীদ সাজিদের প্রতি মানবিক দায়বদ্ধতা থেকেই আমি এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। আমাদের আজকের অধিকারবোধ তার মতো আত্মত্যাগী মানুষের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছে—এটাই আমাকে টেনে নিয়ে গেছে সাজিদের পরিবারের কাছে।”

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন