মুতাসিম তানিম কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী পৌরসভার চামটারপাড় এলাকার কৃষক শামছুল হক এবং তাঁর দুই ছেলে মামুন মিয়া ও ওমর ফারুক মিশ্র কৃষি খামার গড়ে তুলে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
স্থানীয় কৃষি দপ্তরের সুপরামর্শে ২ একর জমি ইজারা (লিজ) নিয়ে দীর্ঘকাল ধরে তাঁরা সেখানে চাষাবাদ করছেন কলা, পেঁপে, লাউ, মিষ্টি কুমড়া ও বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি।
এই কৃষি খামারের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো রাসায়নিক সার বর্জন। তাঁরা নিজেদের তৈরি কেঁচো খামারের ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহার করছেন। এর ফলে একদিকে যেমন নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর ফসল উৎপাদন হচ্ছে, তেমনি ভালো ফলন পেয়ে তাঁরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এভাবেই কঠোর পরিশ্রম ও সঠিক পদ্ধতির মাধ্যমে তাঁরা দারিদ্র্যতাকে জয় করে নিজেদের ভাগ্য ফিরিয়েছেন।
কৃষক শামছুল আলমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাঁদের পেঁপে বাগান থেকে প্রতিদিন প্রায় ৮ থেকে ১০ মণ পর্যন্ত পেঁপে বিক্রি হয়।
কাঁচা পেঁপে: মণ প্রতি বিক্রি হয় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা।
পাকা পেঁপে: ছড়ি প্রতি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি করা হয়।
এসব পেঁপে ও কলা বাগান থেকেই সরাসরি বিভিন্ন এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ীরা এসে কিনে নিয়ে যান
শামছুল আলমের ছেলে মামুন মিয়া জানান, ধান চাষের চেয়ে কম খরচে কলা ও পেঁপেসহ অন্যান্য সবজি চাষে মুনাফা অনেক বেশি। তিনি নিশ্চিত করেন যে, নিরাপদ ফসল উৎপাদনের জন্য তাঁরা জমিতে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক সার (ভার্মি কম্পোস্ট) প্রয়োগ করেন, যার ফলে ফলন বৃদ্ধি পাওয়ায় তাঁরা অধিক লাভবান হচ্ছেন।
স্থানীয় অধিবাসী নুর জামাল মিয়া ও আবুল হোসেন জানান, শামছুল আলমের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে ফল ও শাকসবজির বাগান করে সম্পূর্ণ স্বাবলম্বী হয়েছে। তাঁদের এই সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই এখন কৃষি উদ্যোগে উৎসাহিত হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার শাহরিয়ার হোসেন বলেন, নিরাপদ ফসল নিশ্চিত করার জন্য কৃষক শামছুল আলমকে কেঁচো খামার স্থাপন করে ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও জানান, যেকোনো কৃষক বা কৃষি উদ্যোক্তা হতে চাইলে তাঁদের পক্ষ থেকে সকল প্রকার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন